Monday, 30 May 2016

হাইকোর্টের রুল চিকিৎসক-সেবিকাদের ধর্মঘট কেন অবৈধ নয়?


মানুষের জীবন রক্ষায় এবং রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য কর্তব্যকালে চিকিৎসক ও সেবিকাদের ধর্মঘট ডাকা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই রুল দেন। একই সঙ্গে ধর্মঘট বন্ধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক-সেবিকাদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল রোববার মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে এই রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, দেশের চিকিৎসক-সেবিকারা বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় ধর্মঘট ও কর্মবিরতিতে যান। এর ফলে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি করা হয়েছে।

হাইকোর্টের রুল সংশোধিত সিভিল কোর্টস আইনের ৪(৩) ধারা কেন অবৈধ নয়?




Like
      
১৮৮৭ সালের সিভিল কোর্টস আইনের সংশোধিত ৪(৩) ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই রুল দেন।
আইনসচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে হবে।
একই সঙ্গে সংশোধিত আইনের ৪(৩) ধারা অনুসারে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন দেওয়ানি মামলা তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতে স্থানান্তর না করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাইদুল আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
১৮৮৭ সালের সিভিল কোর্টস আইন সংশোধন করে ১২ মে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। সংশোধিত আইন অনুসারে, একজন সহকারী জজ দুই লাখের পরিবর্তে ১৫ লাখ, জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ চার লাখের পরিবর্তে ২৫ লাখ এবং জেলা জজ পাঁচ লাখের পরিবর্তে পাঁচ কোটি টাকা মূল্যমানের মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবেন। সংশোধিত আইনের ৪(৩) ধারায় বলা হয়েছে, পাঁচ লাখ থেকে পাঁচ কোটি টাকার যেসব দেওয়ানি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে, সেগুলো গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতে ফেরত পাঠাতে হবে। সংশোধিত আইনের এই ৪(৩) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সাইদুল আলম খানসহ চারজন আইনজীবী গতকাল রোববার রিট আবেদনটি করেন।

Wednesday, 25 May 2016

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ ভুল আইনে বিচার হওয়ায় ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ






 মে ২৫, ২০১৬

Lik
      

ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ভোলার চরফ্যাশনের আবদুল জলিলের বিচার ভুল আইনে হওয়ায় তাঁকে অবিলম্বে কারামুক্তিসহ ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
যাবজ্জীবন সাজার বিরুদ্ধে আবদুল জলিলের জেল আপিল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর এই রায় দিয়েছিলেন। আজ বুধবার ওই রায় পূর্ণাঙ্গ আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের মামলায় আবদুল জলিলকে ২০০১ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন বিচারিক আদালত। ওই সময় তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর। শিশু আইনে তাঁর বিচার হওয়ার কথা থাকলেও ওই মামলার বিচার হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। ভুল আইনে বিচার করায় জলিলকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Tuesday, 24 May 2016

৫৪ ও ১৬৭ ধারা নিয়ে সরকারের আপিল খারিজ গ্রেপ্তার রিমান্ডের নীতিমালা দেবেন আপিল বিভাগ



গ্রেপ্তার রিমান্ডের নীতিমালা দেবেন আপিল বিভাগ

বিনা পরোয়নায় গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নিয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ-সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকল। আদালত বলেছেন, ৫৪ ও ১৬৭ ধারার কিছু বিধিবিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা (গাইডলাইন) করে দেওয়া হবে। হাইকোর্টের রায়ে দেওয়া নির্দেশনার ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন আসবে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। গত ১৭ মে এ-সংক্রান্ত আপিল শুনানি শেষে গতকাল রায়ের তারিখ ধার্য ছিল। সকালে রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, ‘আপিল ডিসমিসড। তবে কিছু মডিফিকেশন থাকবে। বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের বিষয়ে কিছু গাইডলাইন দিয়ে দেব আমরা।’
১৯৯৮ সালে রাজধানীতে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের পর ডিবি পুলিশের হেফাজতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শামীম রেজা রুবেলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার জের ধরে ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধন চেয়ে আদালতে রিট আবেদন হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর আইনি লড়াই শেষে নিষ্পত্তি হলো আলোচিত এ মামলা।  
রায়ের পর গতকাল আইনজীবীরা বলেন, আপিল খারিজ করায় হাইকোর্টের রায় বহাল থাকল। আদালত হাইকোর্টের রায়ের কিছু সংশোধনী দেবেন, কিছু নীতিমালা করে দেবেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর বিস্তারিত জানা যাবে। সর্বোচ্চ আদালত বিনা পরোয়নায় কাউকে গ্রেপ্তার (৫৪ ধারায়) ও যেকোনো মামলায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের (১৬৭ ধারায়) বিষয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখায় এটি মানতে এখন সরকার বাধ্য। সর্বোচ্চ আদালতের গাইডলাইন মেনে চলতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
ঔপনিবেশিক শাসন পাকাপোক্ত ও চিরস্থায়ী করার জন্য ১৮৯৮ সালে ফৌজদারি আইন পাস করা হয়। এই আইনের ৫৪ ধারায় পুলিশকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। যখন-তখন যাকে-তাকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা থাকায় যেকোনো ঘটনায় সন্দেহমূলকভাবে গ্রেপ্তার করে ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গ্রেপ্তার অনেকে পুলিশি হেফাজতে হয়রানির শিকার হয়। কখনো কখনো পুলিশ হেফাজতে আটক ব্যক্তির মৃত্যুর নজিরও রয়েছে দেশে।
রুবেলের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলে বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে তৎকালীন সরকার। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে। কিন্তু সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)
হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট রায়ে ঔপনিবেশিক এ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় কিছু সংশোধনী আনতে সুপারিশ ও নির্দেশনা দেন।
তবে ১৩ বছর আগে হাইকোর্ট যেসব নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তা আজও মানা হচ্ছে না। যেহেতু হাইকোর্টের নির্দেশনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছিল সে কারণে এত দিন মানার বাধ্যবাধকতাও ছিল না।
এখন আইনজীবীরা মনে করছেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখায় পুলিশ হেফাজতে হয়রানি ও বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের হার কমবে। রিমান্ডে নিয়ে আসামির সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে তা নিয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না আইনে। হাইকোর্ট রায়ে পাঁচটি দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগ তা বহাল রেখেছেন। কিছু নীতিমালাও দিয়ে দেবেন রায়ে। এমন নীতিমালা হলে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের হারও কমে আসবে।
রাষ্ট্রপক্ষে এই আপিল পরিচালনা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাডভোকেট ইদ্রিসুর রহমান প্রমুখ মামলা পরিচালনা করেন।
রায়ের পর ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপিল ডিসমিস হয়ে গেছে। এর অর্থ হচ্ছে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকল। তবে আদালত যেহেতু বলেছেন কিছু সংশোধনী ও গাইডলাইন দেবেন, সে কারণে এখনই বলা যাচ্ছে না রায়ে কী থাকছে আর কী থাকছে না। পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর বিশ্লেষণ করে বলা যাবে কী হলো। তবে মনে হচ্ছে, আমরা ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে বেরিয়ে একবিংশ শতাব্দীতে প্রবেশ করছি।’
ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। পুলিশি নির্যাতন থেকে মানুষ রক্ষা পাবে। জিজ্ঞাসাবাদের পুরনো সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পাবে মানুষ।’ তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা মানতে সরকারের বাধ্যবাধকতা থাকবে।
ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো বহাল থাকছে। তা মানায় এক ধরনের বাধ্যবাধকতা তৈরি হলো। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান হলো। বিনা কারণে গ্রেপ্তার বা হয়রানি দূর হবে।
অ্যাডভোকেট ইদ্রিসুর রহমান বলেন, এই রায়ে বলা হয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশনা ও সুপারিশগুলোর বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরি করে দেবেন আপিল বিভাগ। তাই পূর্ণাঙ্গ রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩৯ ও ৪৩৯ এ ধারা নিয়ে একটি মামলায় ধারা দুটি সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু ৩৩ বছরেও ওই রায় কার্যকর করা হয়নি বলে আদালত উল্লেখ করেন। রায় কার্যকর না করা নিয়ে এই আপিলের শুনানির সময় আদালত দুঃখ প্রকাশ করেন। অ্যাডভোকেট ইদ্রিসুর রহমান এ কথা জানান। ইদ্রিসুর রহমান আশা করেন, আপিল বিভাগের গতকালের রায় মেনে চলে আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।
রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল তাঁর কার্যালয়ে বলেন, ‘সংবিধানের কিছু অনুচ্ছেদ আছে ৩১, ৩৫ বা মানবাধিকারসংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলো। আদালতের অভিমত হলো যে আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন বা পুলিশদের কাজ করা সংক্রান্ত পিআরবি, এ সমস্ত আইন আর সংবিধান এটা পরিপন্থী হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন সে রায়টি ছিল কিছু মন্তব্য বা কিছু রিকমেন্ডেশন। সংবিধানে যে বিধিবিধান তার আলোকে ফৌজদারি কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন ইত্যাদি সংশোধনের প্রয়োজন মনে করে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছিল। এটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।’ আপিল বিভাগ এ বিষয়ে নিজেরা আবার কিছু মডিফিকেশন, রদবদল করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এখন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আপিল বিভাগ যে রায় দেবেন বা যে সমস্ত নির্দেশনা দেবেন তার আলোকে সরকার পদক্ষেপ নেবে। সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে পুলিশের পরিচয় দেওয়া উচিত। যারা পরিচয় না দিয়ে গ্রেপ্তার করে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক নয় বলে মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্ট রায়ে ৫৪ ও ১৬৭ ধারার বিধান ছয় মাসের মধ্যে সংশোধন করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে ১২ দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে আপিল করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। তখন আপিল বিভাগ লিভ পিটিশন মঞ্জুর করলেও হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলো স্থগিত করা হয়নি। ১৩ বছর পর ওই আপিলের ওপর গতকাল রায় হলো।
৫৪ ধারা সংশোধনে হাইকোর্টের রায়ে দেওয়া নির্দেশনা
(ক) কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে হলে পুলিশকে তার নিজের পরিচয় দিতে হবে, প্রয়োজনে গ্রেপ্তারকারীর পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।
(খ) গ্রেপ্তারের পর ওই ব্যক্তিকে দ্রুত থানায় নিতে হবে ও গ্রেপ্তারের কারণ লিপিবদ্ধ করতে হবে। কখন, কত তারিখে, কী কারণে বা কী অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য কারণে এবং কোথা হতে গ্রেপ্তার হলো—তা ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
(গ) এই ধারায় গ্রেপ্তারকৃতদের জন্য আলাদা ডায়েরি থাকবে থানায়।
(ঘ) গ্রেপ্তারকৃতদের শরীরে আঘাত থাকলে, আঘাতের কারণ লিপিবদ্ধ করতে হবে, তার চিৎসাির জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবে ও আঘাত সম্পর্কে ডাক্তারের সনদ আনতে হবে।
(ঙ) গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতকে এর কারণ জানাবে।
(চ) বাসা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোথাও থেকে গ্রেপ্তার করলে গ্রেপ্তারকৃতের নিকটাত্মীয়কে টেলিফোন বা বার্তাবাহকের মারফত এক ঘণ্টার মধ্যে জানাতে হবে।
(ছ) গ্রেপ্তারকৃতকে তার পছন্দসই আইনজীবী বা নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে এবং তা অবশ্যই ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নেওয়ার আগে।
১৬৭ ধারা সংশোধনে হাইকোর্টের নির্দেশনা
(ক) ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে কাচনির্মিত বিশেষ কক্ষে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ হবে। কাচঘরের বাইরে আইনজীবী বা নিকটাত্মীয় থাকতে পারবে।
(খ) কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদে প্রয়োজনীয় তথ্য না পাওয়া গেলে তদন্তকারী পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে আরো সর্বোচ্চ তিন দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। অবশ্যই এর যথাযথ কারণ থাকতে হবে।
(গ) জিজ্ঞাসাবাদের আগে-পরে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির শারীরিক পরীক্ষাসহ চিকিৎসা করাতে হবে।
(ঘ) পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করবেন। বোর্ড বা চিকিৎসক যদি বলেন নির্যাতন হয়েছে, তবে ম্যাজিস্ট্রেট ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযোগ গঠন করবেন।
(ঙ) পুলিশ হেফাজতে বা জেলে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটকে জানাতে হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেট তদন্তসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

Monday, 23 May 2016

৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনীর রায় বহাল




ফৌজদারি কার্যবিধিতে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার (৫৪ ধারা) ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ধারা (১৬৭ ধারা) সংশোধনে এক যুগ আগে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ।
কিছু সংশোধন সাপেক্ষে হাই কোর্টের রায়ই আপিল বিভাগ বহাল রেখেছে। এর ফলে ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষেই এসেছে আপিলের রায়।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করে।
গত সপ্তাহে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে এ বিষয়ে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টর এম আমীর-উল ইসলাম, সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করার পর ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ-কার্যালয়ে তার মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনার পর বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে।
সেসব সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করে। তার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাই কোর্ট এ বিষয়ে কয়েকদফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়।
রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে প্রচলিত বিধি সংশোধন করার পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয় সরকারকে।
রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে ২০০৪ সালে তা মঞ্জুর হয়। তবে হাই কোর্টের নির্দেশনা সে সময় স্থগিত করা হয়নি।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২২ মার্চ আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। দুই কার্যদিবস শুনানি করে গত ১৭ মে আদালত রায়ের জন্য ২৪ মে দিন ঠিক করে দেয়।
হাই কোর্টের নির্দেশনা
ক. আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেওয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে পারবে না।
খ. কাউকে গ্রেপ্তার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে।
গ. গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে কারণ জানাতে হবে।
ঘ. বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তির নিকট আত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাতে হবে।
ঙ. গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে তার পছন্দ অনুযায়ী আইনজীবী ও আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে।
চ. গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে কারাগারের ভেতরে কাচের তৈরি বিশেষ কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ওই কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকট আত্মীয় থাকতে পারবেন।
ছ. জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে।
ট. পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ড গঠন করবে। বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা নেবেন এবং তাকে দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে।
এসব নির্দেশনা ছয় মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল হাই কোর্টের সেই রায়ে।

কেন ধ্বংসের পথে মহৎ আইনের পেশা?


----------------------------------------------
আইন একটি মহৎ পেশা। এই পেশা শুধু পেশা নয়, সাথে মানব সেবা। বহুকাল থেকে আইনজীবীরা সাধারণ মানুষকে এই পেশার মাধ্যমে সেবা দিয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানের এই কথার ভিত্তি প্রায় নাই বললেই চলে। 
এটা আমার কথা না, সাধারণ মানুষের কথা। বর্তমানে কোন সাধারণ মানুষ আইনজীবীকে পছন্দ করেন না। পছন্দ করেন না বললে আবার ভুল হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই ব্যক্তিটির কোন আইনজীবীর প্রয়োজন হয় ততক্ষণ পর্যন্ত একজন আইনজীবী তার কাছে ঠকবাজ, প্রতারক, বাটপার, চিটার আরও কত কি।
প্রথমেই বলেছি আইন একটি মহৎ পেশা। তাহলে এই মহৎ পেশার প্রতি সাধারণ মানুষের এই ধারনা কেন?
খুঁজেছি সেই প্রশ্নের উত্তর এবং খুঁজে বেরও করেছি কিছুটা। আজকাল আমাদের সমাজে একটা প্রবাদ হয়ে গেছে যে মামা ছাড়া কিছু হয় না। সেই মামা টাকা+সম্পর্ক। কিন্তু আইনজীবীর কাছে আসতে গিয়ে সেই ভুলটি করেন। কোন ভুক্তভুগি সরাসরি কোন আইনজীবীর কাছে আসে না সহায়তার জন্য। কোন না কোন পরিচয় বা লবিং বা দালাল এর মাধ্যমে আসে। সে মনে করে তারা তাকে সহায়তা করবে ভাল করে।
কিন্তু কথাটা ঠিক নয়। দালাল বা অন্য লোক আইনজীবীর সহায়তায় কাজটির সমাধান করে দেয় ঠিকই কিন্তু সে ভুক্তভুগির কাছ থেকে টাকাটা বেশি নেয়।
অথচ সাধারণ মানুষ ভাবে সে কমে করে দেয়। আসল কথা হল আপনি যদি দালাল এর মাধ্যমে না আসতেন তাহলে আপনি দালালকে টাকা না দিলেও চলতো।
আর এই ভাবেই সাধারণ মানুষ হয়রানি হচ্ছেন এবং দালাল চক্ররা কোটি পতি হয়ে যাচ্ছে। আজকাল দেখা যায় একজন আইনজীবীর চেয়ে দালালের টাকার পরিণাম বেশি। এইসব দালাল এর জন্য আজ আইন পেশার মত একটি মহৎ পেশা হয়ে উঠেছে প্রতারক হিসেবে। বরাবরের মত প্রকৃত দোষীরা রয়ে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই ভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের শেষ বিশ্বাসটুকুও চলে যাবে।
সবার কাছে একটি প্রশ্ন যে, এই আইনি দালাল নির্মূলের কি কোন আইন নেই? থাকলে কিভাবে তার বাস্তবায়ন সম্ভব?

Legal Notice of Cheque dishonour


(Reg. with A/D)
To
S.A.Khan Mahi
C/O, Mr.Nazir Ahmed Khan
Vill: Kumardugi, PS & District: Chandpur
At present:
House: Karabi, Flat: 1-S/B-3, Lake City, Concord, PS: Khilkhet, District: Dhaka.
…………………..Notice Receiver
From
Mr. Kazi Md. Abu Sufian,
S/O. Commander (Rtd) Kazi Mohammd Abul Kasem (S). BN.
House: 305, Road: 8, DOHS Mirpur
Mirpur-12, PS: Pallabi, District: Dhaka-1216
………………Notice Sender
Through
Md. Anwarul Najim
Advocate
Judge Court Dhaka.
……….On behalf of Sender
Subject: Notice under section 138 of the Negotiable Instrument Act, 1881.
Dear Sir,
Being empowered and instrument by my client hereinafter referred to as “Notice Sender” I do here for and on behalf of my client put under notice to the following effects:
1) That you, “Mr.S.A.Khan Mahi” issued a Bank Cheque of Stander Chartered Bank Limited being A/C No-18-3940322-01 and Cheque No-2062088 amount of Tk. 4,00,000/ (Four Lac) only, dated on 30/12/2011 in the name of my client “Mr. Kazi Md. Abu Sufian”.
2) That on 26/02/2012 my client placed the said cheque to the stander chartered Bank LTD, Dilkusha Branch / Truncation Point (115270004) Dhaka for encashment. But its matter of regret that cheque has been dishonour by the authorize officer of the concerned Bank With the comment of “payment stopped by Drawer”.
3) That later on, my client informed you and communicated with you as large life and over phone for the returning of the said cheque by the authority officer of the Bank with the comment of “payment stopped by drawer”.
4) That reason, you ensured my client to pay the total amount of said cheque immediately. However, till now you have no effort to pay the amount of taka to my client. Now you are not interested to pay your heed about the payment of the cheque issued by you. Rather you threatened my client when money is asked from you. Since, the cheque has been dishonour by the Bank. You are completely liable to pay the amount of cheque to my client. In this circumstance, you have committed the offence under section 138 of the Negotiable Instrument Act, 1881.
5) That in the circumstance stated above, you are requested to pay the full amount of the cheque issued by you to my client within 30 days from the date of receiving of this legal notice. In the event of your failure to pay the said amount of the cheque in the nick of time or within the stipulated period, I have very strict instruction from my client to initiate the legal action by filing criminal case against you.
The risk, responsibility and consequence as to the cost of such legal action shall lie solely upon you.
A copy of this notice is kept in my office for future references.
With thanks
(Md. Anwarul Najim)
Advocate
Judge Court Dhaka.

িবাহ রেজিস্ট্রেশন



রফিক ও শাহানা মুসলিম ধর্মমতে বিয়ে
করে। তাঁদের ৫ বছরের একটি মেয়ে
আছে। বিয়ের ৪ বছর পর শাহানার
সম্মতি না নিয়েই রফিক আরেকটি
বিয়ে করে এবং সে শাহানাকে
দেনমোহর, ভরণ-পোষণ কিছুই দেয় না।
যেহেতু তাঁদের বিয়েটা রেজিস্ট্রি
করা হয় নি তাই শাহানা মামলা করার
কথা বললে রফিক বিয়েটা সম্পূর্ণ
অস্বীকার করে এবং তাকে বাড়ি
থেকে বের করে দেয়। শাহানা বাবার
বাড়িতে ফিরে আসে। তবে শাহানা
ও রফিকের বিয়ের কাজী
শাহানাদের পারিবারিকভাবে
পরিচিত ছিল। এছাড়া তাদের আত্মীয়-
স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা তাদের
বিয়ে সম্পর্কে জানতেন। বিয়ে প্রমাণ
করার জন্য শাহানা তার বাবার সাথে
একজন উকিলের কাছে যায় পরামর্শের
জন্য।
উকিল : আপনার বিয়ে কি
রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল ?
শাহানা : ‘বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কি?’
এটাইতো বুঝি না। এমন কিছু হয়েছে
বলে মনে পড়ে না।
উকিল : রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে
তালিকাভূক্তি। আইনের দ্বারা
নির্ধারিত তথ্যাবলী দিয়ে নির্দিষ্ট
ফরম পূরণ করে সরকারিভাবে বিবাহ
তালিকাভূক্তি করাই হচ্ছে বিবাহ
রেজিস্ট্রেশন। ব্যাখ্যা: ১
শাহানা : মুসলিম আইনে বিবাহ
রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা
হয়েছে ?
শাহানা : ‘বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কি?’
এটাইতো বুঝি না। এমন কিছু হয়েছে
বলে মনে পড়ে না।
উকিল : রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে
তালিকাভূক্তি। আইনের দ্বারা
নির্ধারিত তথ্যাবলী দিয়ে নির্দিষ্ট
ফরম পূরণ করে সরকারিভাবে বিবাহ
তালিকাভূক্তি করাই হচ্ছে বিবাহ
রেজিস্ট্রেশন। ব্যাখ্যা: ১
শাহানা : মুসলিম আইনে বিবাহ
রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা
হয়েছে ?
উকিল : মুসলিম পারিবারিক আইনে
বিয়ের রেজিস্ট্রেশন একটি প্রামাণ্য
দলিল হিসেবে কাজ করে।
রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বিয়ে প্রমাণ
করা কঠিন। রেজিস্ট্রেশন করা না
থাকলে মেয়েরা প্রতারিত হতে
পারে। সকল বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা
আবশ্যক। দেনমোহর, ভরণপোষণ,
উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব
ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রিকৃত
কাবিননামা একটি আইনগত দলিল।
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করা
শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ব্যাখ্যা: ২
উকিল : আপনার বিয়ের সময়ের কি কোন
ছবি আছে বা বিয়ে প্রমাণ করার মত
কোন তথ্য কি আপনার কাছে আছে ?
শাহানা : হ্যাঁ, আমাদের বিয়ের
অনুষ্ঠানের কিছু ছবি আছে। এছাড়া যে
কাজী আমার বিয়ে পড়িয়েছেন
তিনি পারিবারিকভাবে আমাদের
পরিচিত।
উকিল : ছবি দিয়ে বিয়ে প্রমাণ করা
সম্ভব। কিন্তু আপনার বিয়ে রেজিস্ট্রি
করা উচিত ছিল। তাহলে এত সমস্যা হত
না।
শাহানা : হিন্দু ধর্মের আইনে বিয়ে
রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা
হয়েছে ?
উকিল : হিন্দু পারিবারিক আইন
অনুযায়ী হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের
কোন বিধান নাই। যেহেতু
বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা
হিন্দু পারিবারিক আইন মতে
পরিচালিত হয় ফলে বৌদ্ধদের বিয়েও
রেজিস্ট্রেশন করা হয় না। তবে
প্রয়োজনে নোটারী পাবলিকের
মাধ্যমে হলফনামা করা যায়।
শাহানা : খ্রিস্টান ধর্মের আইনে
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে কি বলা
হয়েছে ?
উকিল : খ্রিস্টান ধর্মের আইন অনুযায়ী
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক।
ব্যাখ্যা:3
শাহানা : বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করা
কেন প্রয়োজন ?
উকিল : বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব
পারিবারিক জীবনে অপরিসীম।
রেজিস্ট্রেশন বিয়ের বর-কনে উভয়ের
জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাংলাদেশের
সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিয়ের
রেজিস্ট্রেশন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ
নারীদের জন্য। বিবাহ সম্পর্কিত কোন
জটিলতা বা প্রমাণের প্রশ্ন উঠলে এই
রেজিস্ট্রেশনই প্রমাণ পত্র হিসেবে
কাজ করে।
শাহানা : রেজিস্ট্রেশন করলে
নারীরা কি সুবিধা পায় ?
উকিল : রেজিস্ট্রেশন হলে
অনেকাংশে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ
হয়, কারণ কাবিননামায় প্রমাণ পত্রসহ
বয়স উল্লেখ করতে হয় । এছাড়া নারীর
সুরক্ষায় বিয়ের নিকাহনামা বা
কাবিননামা একটি সত্যতা প্রমাণের
দলিল। কাবিননামা হলো মুসলিম
বিয়ের ক্ষেত্রে একটি চুক্তিপত্র বা
দলিল। খ্রিস্টান বিয়ের ক্ষেত্রেও একই
রকম। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দু বিয়ে
রেজিস্ট্রেশন না হওয়ার কারণে অনেক
হিন্দু নারী এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত
হয়।
শাহানা : কখন এবং কিভাবে বিয়ের
রেজিস্ট্রেশন করা যায় ?
উকিল : মুসলিম বিয়েতে সবচেয়ে ভাল
হয়¾বিয়ের দিনই বিয়েটি রেজিস্ট্রি
করানো। বিয়ের অনুষ্ঠানে সকলের
উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রেশন করলে
তার সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পায়।
শাহানা : বিয়ের দিন রেজিস্ট্রেশন
করা সম্ভব না হলে কখন রেজিস্ট্রেশন
করা যায় ?
উকিল : নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী)
নিজে বিয়ে পড়ালে বিয়ের দিনই
তিনি বিয়েটি রেজিস্ট্রি করবেন।
যদি কাজী নিজে বিয়ে না পড়ান বা
কোন কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানে
রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব না হয় তাহলে
অবশ্যই ৩০ দিনের মধ্যে নিকটস্থ কাজী
অফিসে বিয়ে রেজিস্ট্রি করাতে
হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, অনেক
ক্ষেত্রে কাজী নিজে বিয়ে
রেজিস্ট্রি না করে তার সহকারির
মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি করান।
সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া
ঠিকমত হয়েছে কিনা তা ভালভাবে
দেখে নেয়া প্রয়োজন। ব্যাখ্যা:4
শাহানা : বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময়
কাজীকে কোন কোন বিষয়ের প্রতি
লক্ষ্য রাখতে হয় ?
উকিল : বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময়
বিয়ের কাজীর কতকগুলি বিষয়
সাবধানতার সাথে খেয়াল রাখতে
হয়। বিষয়গুলো হলো:
বরের বয়স কমপক্ষে ২১ এবং কনের বয়স
কমপক্ষে ১৮ হয়েছে কিনা
বর ও কনের বিয়েতে পূর্ণ সম্মতি আছে
কিনা
বিয়ের প্রকৃত সাক্ষী
আশু ও বিলম্বিত দেনমোহর
বিয়েতে উল্লেখিত শর্তসমূহ পূরণ হলেই
কেবলমাত্র কাজী (নিকাহ
রেজিষ্টার) বিয়ে রেজিস্ট্রি করবেন।
তবে তিনি কাবিন নামার ১৮ নং ঘরে
স্ত্রীকে তালাক প্রদানের (তালাক-ই-
তৌফিজের) ক্ষমতা দেয়া হয়েছে কি
না সেই বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে
খেয়াল করবেন।
শাহানা : খ্রিস্টান বিয়ে কে
রেজিস্ট্রেশন করান ?
উকিল : খ্রিস্টান বিয়ের ক্ষেত্রে
যিনি বিয়ে সম্পাদন করবেন তিনিই
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন। ব্যাখ্যা: 5
শাহানা : বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে
কত টাকার প্রয়োজন হয় ?
উকিল : মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে একজন
বিয়ে রেজিস্ট্রার দেনমোহরের
পরিমাণের উপর ভিত্তি করে একটি
বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফি নির্ধারণ
করে থাকেন। ধার্য্যকৃত দেনমোহরের
প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের
জন্য ১০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি। তবে
রেজিস্ট্রেশন ফি এর পরিমান ১০০
টাকার কম হবে না এবং ৪০০০ টাকার
উপরে হবে না। যেমনঃ কারো
বিয়ের দেনমোহর ১০,০০০ টাকা হলে
ফি হবে ১০০ টাকা, ১০,৫০১ টাকা হলে
১১০ টাকা (প্রতি হাজারের
অংশবিশেষের জন্যও ১০ টাকা), ১১,০০০
টাকা হলেও ১১০ টাকা, দেনমোহরের
পরিমান ৫০০,০০০ টাকা হলেও ৪০০০
টাকা (সর্বোচ্চ পরিমান ৪০০০ টাকা)
আবার দেনমোহর ১০০০ টাকা হলেও ফি
দিতে হবে ১০০ টাকা (যেহেতু
সর্বনিম্ন পরিমান ১০০ টাকা)।
উল্লেখ্য রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের
দায়িত্ব বরপক্ষের। সরকার সময়ে সময়ে
প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও
ধার্য্য করে থাকে।
শাহানা : বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি
কারা প্রদান করেন ?
উকিল : বিয়েতে বরপক্ষ রেজিস্ট্রেশন
ফি প্রদান করবেন। রেজিস্ট্রেশন ফি
জমা দিলে নিকাহ রেজিষ্টার একটি
প্রাপ্তি রশিদ প্রদান করবেন। এখানে
উল্লেখ্য মুসলিম বিয়ে
রেজিস্ট্রেশনের পর নিকাহ
রেজিষ্টার বাধ্যতামূলকভাবে বর ও
কনেপক্ষকে বিয়ের কাবিননামার
সত্যায়িত কপি প্রদান করবেন। খ্রিস্টান
বিয়ের সত্যায়িত কপির জন্য যথাযথ ফি
দিয়ে সত্যায়িত কপি নিতে হবে।
শাহানা : বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের
সুফল কি কি ?
উকিল : একটি বিয়ের রেজিস্ট্রেশন
করলে তার অনেক সুফল পাওয়া যায়।
সুফলগুলো হলো:
ক) বিয়ের পক্ষদ্বয় বিয়ে অস্বীকার
করতে পারেনা এবং পরস্পর পরস্পরের
প্রতি কিছু দায়-দায়িত্ব পালনে বাধ্য
হয়।
খ) স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে বা
স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে বিয়ে করলে
বা করার উদ্যোগ নিলে স্ত্রী আইনগত
ব্যবস্থা নিতে পারেন।
গ) স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী দেনমোহর
ও ভরণপোষণ আদায় করতে পারেন।
ঘ) স্বামী/স্ত্রী উভয়ে উভয়ের সম্পত্তির
বৈধ উত্তরাধিকার হতে পারেন।
ঙ) বিয়ের সময় দেনমোহর ধার্য্য না
হলেও স্ত্রী ন্যায্য দেনমোহর আদায়
করতে পারেন।
শাহানা : বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না
করা কুফল কি কি ?
উকিল : রেজিস্ট্রেশন না করলে কুফল
হিসেবে উপরে উল্লেখিত বিষয়ে
স্বামী অথবা স্ত্রী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ
বা দাবী আদায় করতে পারেন না।
বিশেষ করে বিয়ের মিথ্যা কথা বলে
নারীদের পাচার, শ্লীলতাহানী
ইত্যাদিরূপে ব্যবহার করতে পারে কিন্তু
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হলে এই ধরণের
নারী নির্যাতন বন্ধ হবে বা অনেক
কমে যাবে।
বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্ব অনেক
বেশি। বিয়ের দিনই রেজিস্ট্রেশন
করা যুক্তিযুক্ত। যেহেতু বিয়ের লিখিত
প্রমাণ হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন তাই বিয়ে
সংক্রান্ত যে কোন প্রশ্নে, যে কোন
সমস্যায় এর প্রয়োজন হয়। যেহেতু
শাহানার বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা
ছিল না তাই শাহানার সাক্ষী,
কাজী ও বিয়ের সময় তোলা ছবি
দিয়ে উকিল আদালতে রফিকের
সাথে তার বিয়ের প্রমাণ করতে
পারে। কিন্তু যদি তার বিয়ে
রেজিস্ট্রি করা থাকতো তাহলে
তাকে এসব কিছুই প্রমাণ করতে হতো
না। বিনা অনুমতিতে বিয়ে করার জন্য
রফিক আইন অনুযায়ী শাস্তি ভোগ
করছে। বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না করা
একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সুতরাং এ
ধরণের অপরাধ করা থেকে বিরত
থাকতে হবে।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন.১. রেজিস্ট্রেশন না করা কি
শাস্তিযোগ্য অপরাধ? শাস্তির পরিমাণ
কি?
উত্তর. মুসলিম আইনে রেজিস্ট্রেশন না
করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
রেজিস্ট্রেশন না করলে ২ বৎসর
বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৩০০০ টাকা
জরিমানা বা উভয়দন্ড হতে পারে তবে
বিয়েটি বাতিল হবে না। খ্রিস্টান
আইনে রেজিস্ট্রেশন বিয়ের অন্যতম
অংশ ফলে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
এছাড়া হিন্দু, বৌদ্ধদের বিয়ে
রেজিস্ট্রেশনের নিয়ম এখনো চালু হয়
নি।।
প্রশ্ন.২, যদি বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে
রেজিস্ট্রি না হয় তাহলে কতদিনের
মধ্যে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে হবে?
উত্তর.বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ে
রেজিস্ট্রেশন করা উত্তম তবে কোন
কারণে তা না হলে ৩০ দিনের মধ্যে
রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
প্রশ্ন.৩.বিয়ের দেনমোহর এর পরিমাণের
উপর কি রেজিস্ট্রেশন ফি ধার্য্য হয়?
উত্তর. হ্যাঁ, বিয়ের দেনমোহরের
পরিমাণের উপর রেজিস্ট্রেশন ফি
ধার্য্য হয়। ধার্য্যকৃত দেনমোহরের প্রতি
হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১০
টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি। তবে
রেজিস্ট্রেশন ফি এর পরিমান ১০০
টাকার কম হবে না এবং ৪০০০ টাকার
উপরে হবে না। যেমনঃ কারো
বিয়ের দেনমোহর ১০,০০০ টাকা হলে
ফি হবে ১০০ টাকা, ১০,৫০১ টাকা হলে
১১০ টাকা (প্রতি হাজারের
অংশবিশেষের জন্যও ১০ টাকা), ১১,০০০
টাকা হলেও ১১০ টাকা, দেনমোহরের
পরিমান ৫০০,০০০ টাকা হলেও ৪০০০
টাকা (সর্বোচ্চ পরিমান ৪০০০ টাকা)
আবার দেনমোহর ১০০০ টাকা হলেও ফি
দিতে হবে ১০০ টাকা (যেহেতু
সর্বনিম্ন পরিমান ১০০ টাকা)।
উল্লেখ্য রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের
দায়িত্ব বরপক্ষের। সরকার সময়ে সময়ে
প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও
ধার্য্য করে থাকে।
প্রশ্ন. ৪.বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময়
নিকাহ রেজিষ্টারের দায়িত্ব কি?
উত্তর. বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সময়
বিয়ের অবশ্য পালনীয় শর্ত পূরণ হয়েছে
কিনা তা নিকাহ রেজিষ্টার যাচাই-
বাছাই করে দেখবেন যেমন: ১.
বিয়েতে বর-কনের বয়স যথাক্রমে ২১ ও
১৮ বছর হয়েছে কিনা (দালিলিক
প্রমাণসহ), ২. উভয়ের সম্মতি আছে কিনা,
৩.দেনমোহর ধার্য্য হয়েছে কিনা, ৪.
কারো কোন অধিকার খর্ব হয়েছে
কিনা ইত্যাদি।
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশ বিবাহ রেজিস্ট্রেশন,
১৯৯৮, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ
সরকার এর মহিলা ও শিশু বিষয়ক
মন্ত্রণালয় কর্তৃক, ইউনিসেফ
বাংলাদেশ-এর সহায়তায় প্রকাশিত।
পারিবারিক আইনে বাংলাদেশের
নারী, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, প্রথম
প্রকাশ: জুন-১৯৯৭।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক
(রেজিস্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪।
http://www.minlaw.gov.bd/mregistration.htm
(১৪ মে ২০১০ তারিখে পর্যবেক্ষণকৃত)
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন : ব্যাখ্যা
ব্যাখ্যা:১
১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক
(রেজিস্ট্রেশন) আইন অনুযায়ী প্রতিটি
বিবাহ সরকার নির্ধারিত কাজী
দ্বারা রেজিস্ট্রেশন করা আবশ্যক।
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না করা
শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ১৮৭২ সালের
খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট অনুযায়ী
খ্রিস্টানদের বিয়ে রেজিস্ট্রেশন
করা বাধ্যতামূলক।
খ্রিস্টান বিয়েতে রেজিস্ট্রেশন
বিয়ের একটি অংশ হওয়ায় প্রায় সকল
বিয়েরই রেজিস্ট্রেশন হয়ে থাকে।
ব্যাখ্যা:২
কেউ যদি বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের
বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তার ২
বৎসরের বিনাশ্রম কারাদন্ড বা
৩০০০ টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ড হতে
পারে। তবে রেজিস্ট্রেশন না হলে
বিয়ে বাতিল হবে না। বিয়ে
রেজিস্ট্রেশনের
মাধ্যমে উভয়ের উপর কিছু দায়-দায়িত্ব
বর্তায়।
ব্যাখ্যা:৩
১৮৭২ সালের খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট
অনুযায়ী খ্রিস্টানদের বিয়ে
সম্পাদিত হয়। খ্রিস্টান বিয়ে একটি
ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং একটি পবিত্র চুক্তি।
খ্রিস্টান বিয়ে লিখিত মাধ্যমে
সম্পাদিত হয় এবং রেজিষ্ট্রি
বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয়। খ্রিস্টান
বিয়ে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয়
ধাপগুলো হলো:
বিয়ের পাত্র-পাত্রীর পুরো নাম ও
ডাক নাম এবং পেশা বা অবস্থা
পাত্র-পাত্রীর আবাসস্থল ও
বাসস্থানের ঠিকানা
পাত্র-পাত্রী কতদিন ধরে ঐ
এলাকায় বসবাস করছে তার প্রমাণ
পত্র
বিয়ে সম্পাদনের চার্চ বা অন্যকোন
স্থান
নোটিশ প্রাপ্তির পর চার্চের ধর্মযাজক
নোটিশটি খোলা জায়গায় লাগিয়ে
দেবেন। যাতে নোটিশটি সকলের
নজরে আসে।
এভাবে নোটিশ কয়েক সপ্তাহ
ঝোলানো থাকবে যাতে কারো
কোনো আপত্তি থাকলে তিনি যেন
আপত্তি করতে পারেন।
যদি কোন আপত্তি না পান তাহলে
চার্চ প্রধান বিয়ের পক্ষগণের নিকট
থেকে একটি ঘোষণা গ্রহণ করবেন।
এই ঘোষণাটি বিয়ের পক্ষগণ
ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হয়ে
দিবেন যাতে থাকবে-
2) বিয়ের পাত্র-পাত্রীর মধ্যে
জানামতে এমন কোন ঘনিষ্ট আত্মীয়তা
বা রক্তের সম্পর্ক নেই যাতে তাদের
বিয়েতে আইনসম্মত বাধা আছে।
3)বিবাহের পাত্র-পাত্রী দুজনেই আইন
অনুযায়ী সাবালক।
এই ঘোষণা সম্পন্ন হওয়ার কমপক্ষে ৪ দিন
পর চার্চের ধর্মযাজক বিয়ের
আবেদনকারীকে একটি সার্টিফিকেট
প্রদান করবেন।
সার্টিফিকেট জারির ২ মাসের মধ্যে
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
ব্যাখ্যা:৪
একটি ইউনিয়নে ১ জন সরকারি বিয়ে
রেজিষ্টার দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকেন। এই
রেজিষ্টার জেলা রেজিষ্টার এবং
জেলা রেজিষ্টার চূড়ান্তভাবে
রেজিস্ট্রেশন মহাপরিচালকের
অধীনে ও তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব পালন
করে থাকেন।
ব্যাখ্যা:৫
রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজক, চার্চ অব
ইংল্যান্ড অথবা চার্চ অব স্কটল্যান্ড এর
কোন যাজক, নির্বাচিত কোন বিশপ,
খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট ১৮৭২
এর আওতায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোন
মিনিষ্টার অব রিলিজিয়ন অথবা উক্ত
এ্যাক্টের আওতায় নিযুক্ত কোন বিবাহ
রেজিষ্টার খ্রিস্টান বিবাহ সম্পাদন ও
করতে পারেন।